Skip to main content

গভীরতা

        তুমি গভীরতা ছুঁতে চাও? নিতে পারবে অতটা শ্বাস? 
        যে বাতাসে ভেসে থাকতে চাও, সে বাতাসে ঝড়ও ওঠে। সে ঝড়ের তালে দিতে পারবে তাল? পাগল নারকেল গাছটার মত?
        তুমি গভীরতা ছুঁতে চাও? কতটা জল জমেছে বুকে? কাঁদার শেষে তাকাতে শেখে চোখ। টইটুম্বুর কান্না বাঁধ দিলে, জীবন হ্রদ স্থির। কি ভেবেছিলে কেঁদেই জীবন পার হবে?

প্রতিশ্রুতি

        ব্যস্ত সন্ধ্যে। গুমোট শহর। পাদানিতে দাঁড়ানো অধৈর্য অস্থির উদ্বিগ্ন মানুষের সারি। যেন সব কিছু হারিয়ে যাবে এখনই ঝাঁপ না দিলে। ঝাঁপ দিলেও পাওয়া যাবে সে নিশ্চিন্ততাও নেই। বিভ্রান্তিতে লক্ষ্যহীন দৌড়াদৌড়ি।
        ছেলেটার গায়ে নীল টিশার্ট তার সাথে চলতি কালারের বাজার উপচানো সস্তা জিন্স। সদ্য যৌবনে পা। খেটে খাওয়া শরীরের সন্ধ্যের অবসরের সস্তা শৌখিন বিলাস।         সিগারেটের দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে। পা দোলাচ্ছে। ঠোঁটে দুলছে জ্বলন্ত সিগারেট, একটার পর একটা। ফোন কানের কাছে উঠছে বারবার, "একবার এসো, প্লিজ..."। জীবনবাজি ডাক।
...

দমকা হাওয়া

সেই দমকা হাওয়াটা কই? সেই দমকা হাওয়াকে চাই। তার নিজের কিছু নেই - না ভার, না দায়, না শোক, না ক্ষোভ। সে আসবে, বিনা আমন্ত্রণেই আসবে। সিংহদুয়ার খোলা না পেলে ঢুকবে খিড়কীর দরজা দিয়ে। ঘরের গুমোট হাওয়াকে বলবে, চল। দরজা জানলাগুলো কাঁপতে কাঁপতে খুলে যাবে, খুলতে না চাইলে ভেঙে যাবে। আমি হঠাৎ দেখব ভাঙা জানলার বাইরে সমুদ্র। যার গর্জন আমি আগে শুনেছি - ঘুমে। ভাঙা পাল্লাটা থরথর করে কাঁপছে ভয়ে, আত্মগ্লানিতে। আমার চোখ-মুখ নোনতা হাওয়ায় চটচটে হয়ে উঠছে। আমি দরজাটায় হাত দিতেই দরজাটা বালির মত ঝুরঝুর করে পড়ে গেল, যেন কত বাধ্য সে আজ আমার। 
...

গভীর রাত

গভীর রাত। বাউল নদীর তীরে একা বসে, একতারার তারে, তর্জনীর আঘাতে ফুলকির মত সুর সৃষ্টি করছিল। 
    এক আকাশ তারা কখনো প্রজাপতির মতো কখনো জোনাকির মতো উড়ে উড়ে আকাশে অক্ষর সৃষ্টি করছিল।
...

পূর্ব গগন ভাগে

আমিও খড়কুটো জড়ো করেছিলাম। আমিও বাসা বেঁধেছিলাম বিশাল অশ্বত্থ গাছটার একটা ডালের কোণায়। আমি জানতাম অশ্বত্থ গাছের চেয়ে বড় গাছ আর কি বা হতে পারে?
        ঝড় উঠল। আমি নিশ্চিত, যতই ঝড় হোক, ভাঙবে কি অশ্বত্থ? কক্ষনো না, কক্ষনো না।
        ঝড় বাড়ল। চারদিক ধুলায় ধুলায় ঢেকে অন্ধকার করে তুলল। গাছটা মাতাল না পাগল হল? সে উদ্দাম ঝড়ের সাথে যেন তাল রাখতে পারছে না আর। আমি বুঝতে পারছি তার শিকড় থেকে আর্তনাদ ভেসে আসছে। গাছের আরো আরো পাখিগুলো ভয়ে, আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে উড়ে বেড়াতে লাগল। ঝড়ের হাওয়ার সাথে তাদের ডানা পেরে উঠবে কেন? ঝড়ের শাসনে তারা মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়তে লাগল। গাছের ডালে ছিটকে এসে লাগল তাদের কোমল শরীর।
...

মোহনা

আমি মোহনার সামনে দাঁড়িয়ে। মোহনা দিগন্তলীন হয়ে আমার সামনে শুয়ে। সুদূর অতীতের গুহা থেকে হামাগুড়ি দিয়ে দিয়ে বেরিয়ে আসছে লক্ষ লক্ষ খণ্ড খণ্ড আমি। আমার উপর দিয়ে উড়ে চলে গেল তারা গোধূলির আলোছায়া মাখা আলোয় বাদুড়ের মত। কেউ কেউ মোহনার জলে ডুবে গেল। কেউ কেউ দিগন্তে গেল মিলিয়ে। যেন একটা শুকনো পাতা ভরা গাছ, এক দমকা হাওয়ায় সব পাতা হারিয়ে, শূন্য ডালগুলো আকাশের দিকে মেলে স্থির উদাস হয়ে দাঁড়িয়ে। আমার কোথাও যাবার নেই।
...

মানবিক

হাওয়াটা সুন্দর, মানবিকও 
হাওয়া কখনো মানবিক হয় ?
হয়। তুমি চুল আঁচড়াওনি কেন? তোমায় খোলা চুলের চাইতে খোঁপা চুলে সুন্দর দেখায়।
...

আধা এবং আধা

মানুষটা একটা ডোবার ধরে থাকত। ডোবার জলে নাইত। তার মাথায় ছিল দিগন্তলীন অসীম এক সমুদ্র স্বপ্ন।
মানুষটা কুঁড়ে ঘরে থাকত। কুঁড়ে ঘরেই ঘুমাতো। বর্ষা-বসন্ত-গ্রীষ্মের সাথে কুঁড়ে ঘরে একা একাই কাটত। তার মাথায় ছিল জন-অরণ্যের একটি প্রান্তে মানুষে ঘেরা ঘর বাঁধার স্বপ্ন।
মানুষটা সিদ্ধভাত একা একাই দুপুরে-রাতে খেত। ডোবার জলেই আঁচাতো। তার মাথায় ছিল এক বিরাট দাওয়তের স্বপ্ন। অযুত নিযুত মানুষ বসেছে খেতে, কোলাহলে সে ছুটে ফিরছে এদিক ওদিক সেদিক - চৌদিকে তার আনন্দ আনন্দ আনন্দ।

মানুষেই ঘুরে এলাম

এইমাত্র আমি বাজার থেকে এলাম। জীবন্ত মানুষের ভিড়, প্রতিদিন যেমন হয়। তবে আজ বিশেষভাবে দেখলাম। চোখ দিয়ে, মনের সবকটা হাত দিয়ে স্পর্শ করে এলাম। এইমাত্র আমি বাজার ঘুরে এলাম। শ্মশান নয়, কবরস্থানও নয়, বাজার ঘুরে এলাম। মানুষ মানে বাচ্চাও। রঙীন কাপড়ে ঢাকা সুপ্ত শরীরের কুঁড়িতে আলতো পাপড়ি মন। এইমাত্র আমি বাজার ঘুরে এলাম। শ্মশানে না, না তো কবরস্থান দেখে এলাম। রঙীন চকোলেটের খোসা বাজারের রাস্তায় ধুলোর সাথে মি

যেন একটা রেসের মাঠ

যেন একটা রেসের মাঠ। সব ধর্মপ্রণেতা পুরুষেরা ঘোড়াগুলোর জায়গায় দাঁড়িয়ে। গ্যালারীতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক। কত রঙের পোশাক। সাদা, গেরুয়া, কালো, নীল, লাল। সব্বাই চীৎকার করছে - আরো জোরে...আরো জোরে...আমরা এগিয়ে...আসল ঈশ্বর আমাদের...ওদের নকল...জোরে... জোরে...জোরে....

শুধু যেন শেষ অবধি পৌঁছানোর অপেক্ষা...

Subscribe to গদ্য কবিতা