Skip to main content

আলোর সাগরে

সিদ্ধেশ্বরবাবু এমনিতে বেশ খোলা মনের মানুষ। কিন্তু নিজের নামটা নিয়ে ওনার খুব আক্ষেপ। এখনও সিদ্ধিলাভ বলতে যা বোঝায় তা হল না। অবশ্য ঠিক কি বোঝায় তাও সঠিকভাবে কোনো ধারণা নেই ওনার। তবু খুব ইচ্ছা, সিদ্ধিলাভ হোক। বয়েস চুয়ান্ন। সরকারি অফিসে

চ্যালাকাঠ

আস্ত একটা চ্যালাকাঠ কিনে লোকটা বাড়ি ফিরছিল। সামনে জটলা দেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। সামনে এগোতে পারছে না। প্রচণ্ড ভিড়। বেশির ভাগ মেয়ে মানুষ। আগে মেয়ে মানুষ ঠেলে ভিড়ে ঢুকতে বেশ লাগত। এখন লাগে না। বয়েস হয়েছে। 

টেস্ট ড্রাইভ

রত্না মিষ্টির প্যাকেটটা একটা প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে নিয়ে হনহন করে হাঁটছে। 

এই মিষ্টিগুলো না, ভুল মিষ্টি কিনে নিয়ে গেছে ছেলেটা, এতে টকটক গন্ধ লাগে তার। ফেরৎ দিতে হবে।

গোপাল

শরীরটা গ্রাম গ্রাম, তার মধ্যে কব্জা করতে চাইছে শহুরে আত্মা। কলকাতা থেকে বেশ কিছুটা দূরের একটা গ্রাম। এতটা দূরেরও নয় যে কলকাতা বিদেশ, আবার এতটা কাছেও নয় যে কলকাতার শ্বাস-প্রশ্বাসের আঁচ লাগে। আঁচটা না লাগলেও তাপটা লাগে। 

নীলিমায় নীল

গভীর জঙ্গল। সেই জঙ্গলের মধ্যে একটা নীলপদ্ম ফুটে। এই জঙ্গলে নীলপদ্ম বিশেষ একটা ফোটে না। সবাই ভাবল, এ কিরকম ফুল? কেউ দেখল সন্দেহে, কেউ দেখল ঈর্ষায়, কেউ দেখল তাচ্ছিল্যে। পদ্ম চুপ করে থাকে। কাকে বলবে সে? আর কি-ই বা বলবে?

ইউটার্ন

হঠাৎ কে বলল, "এতবড় আকাশটা অপচয় হল শুধু।" কে বলল? এদিক ওদিক তাকালাম। চারদিকে ধু ধু মাঠ। দিগন্তে সাদা সাদা মেঘ, হঠাৎ দেখলে মনে হবে, আরে একি? কোন চিমনির ধোঁয়া?

খারিজ

ধান ক্ষেতের নাগাল ঘেঁষে থালার মত চাঁদ। ধানগাছগুলো সন্ধ্যের হাওয়ায় সারা শরীর দুলিয়ে শিহরণ জাগিয়ে তুলেছে ক্ষেতে। হালকা সরসর শব্দ উঠছে নূপুরের মত কোনো অলক্ষ্য পায়ের। সে পায়ে যেন আলতা। চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত পাকা ধানের শরীর। বিচ্ছুরিত সাদা

সাহস

সত্যি বলতে ওর কথায় কিছু আসে যায় কি?
পাপোসের উপর বুড়ো আঙুলটা ঠেকাবার চেষ্টা করে যাচ্ছে বিপ্লব। পা পাচ্ছে না। জুঁই খাটের এক কোণায় হেলান দিয়ে বসে। দেওয়ালে লোকনাথ বাবার ক্যালেণ্ডারটা পাখার হাওয়ায় বাঁদিক ডানদিক দুলছে।

বদল

গাছটা ঠিক করল, সে আর বোকা হবে না। আগে তার ডালপালা চতুর্দিকে মেলা থাকত। পাখি বাসা বাঁধত, পিঁপড়েরা বর্ষাকালে ওর ডালে উঠে আশ্রয় পেত, ক্লান্ত পথিক ওর ছায়ার তলায় বিশ্রাম নিত। গাছটা আনন্দেই ছিল। কিন্তু বোকার মত আনন্দে। 

আমের বোল

ফ্লাশ করে মনোরমা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল বাথরুমে। স্নান করবে না ঠিক করেইছিল সকাল থেকে। জ্বরজ্বর ভাব আছে একটা। জ্বর নেই, এই সিজন চেঞ্জের সময়টায় হয় এটা প্রত্যেক বছর। তবু বাথরুম থেকে বেরোতে ইচ্ছা করছে না মনোরমার। বাথরুমে একটা ছোটো পিঁড়ি মতন আছে, ছোটো ননদ পুষ্পা কিনেছিল।
Subscribe to অনুগল্প