হাল হকিকৎ

কদিন আগে ট্রেনে ভারতের পশ্চিম প্রান্ত থেকে পূবের দিকে ফিরছিলাম। ট্রেনটা বিকালবেলা আসল টাটাতে। সশস্ত্র পুলিশবাহিনী উঠল দলে দলে। পনেরো মিনিট অন্তর অন্তর টহল চলছে আমাদের চোখের সামনে দিয়ে। কেন? শুনলাম খড়গপুর অবধি বিপদসঙ্কুল পথ।

আবার একটা মৃত্যু! না ইতিহাসের দৃষ্টিতে নতুন কিছু না। শুধু ইতিহাসের গতিপথটা বুঝছি না। 
 
বার্টান্ড রাসেলের দুটো উক্তি ভীষণ ভাবে মনে আসছে। ওনার জীবনের একদম শেষের দিকে একটা টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে, ওনাকে আগামী প্রজন্মের জন্য কিছু বলতে বলা হয়েছিল (ইউটিউবে প্রাপ্য)।

কলকাতায় কিছু বিশেষ রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষ, কবি ইত্যাদিরা জমায়েত হয়ে গোমাংস ভক্ষণ করে প্রতিবাদ জানালেন - খাবারে কোনো ফতোয়া মানছি না। 
অবশ্যই এঁরা উদারচেতা। তা প্রমাণ করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতার চেয়ে নিরাপদ স্থানও নেই, এও তাঁরা ভালভাবেই জানেন। 

উৎসবের পিছনে এককীত্বের একটা খোঁচা থাকে। সব উৎসবের। আমরা যে প্রতিদিন বিচ্ছিন্ন থাকার অভ্যাসগুলো সযত্নে গড়ে তুলি- তার বিরুদ্ধে একটা তো কিছু করা চাই!

মা দূগ্গা, পরেরবার কুমোরটুলিতে আসার সময়, আগে থেকেই বক্ষবন্ধনীটা শ্বশুরবাড়ী থেকে নিয়ে নামিস মা। চিত্রগ্রাহকদের চিত্রের ঠেলায় তোকে যে রুপে দেখতে হচ্ছে... আর তো পারা যায় না মা। আদিরস, ভক্তিরসে মিশে ঘেঁটে একাকার দেখি গো চারদিক। বলি বসন পরাটুকু একটু ধৈর্য ধরলে না গো!

গণতন্ত্র আবার কি? গণতন্ত্র মানে হল, গণ নির্বাচিত রাজতন্ত্র। অভিধানে যাই লেখা থাক, এটাই আমরা বুঝি। 

শুনেছি একটা ইন্দ্রিয় বিকল হলে বাকি ইন্দ্রিয়গুলো নাকি খুব শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

     আচ্ছা মন বিকল হলে কি শরীর শক্তিশালী হয়ে ওঠে আরো বেশি? অনুভব বা বোধশক্তি কমে গেলে কি ভোগ শক্তি আরো তীব্র হয়ে ওঠে? মনে হয় তাই। তা না হলে একজন মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে, নিজের মনুষ্যত্ত্বের মৃত্যু ঘটিয়ে, এত পাশবিক হওয়ার আত্ম-অনুমতি পায় কি করে আরেকজন মানুষ? 

মানুষটার মৃত্যু/অন্তর্ধান রহস্য যতটা এঁদের ভাবিয়ে তুলেছে, উৎসাহিত করেছে, তার সিকির সিকি ভাগ যদি মানুষটার জীবনের ওপর থাকত! তাঁর আদর্শের প্রতি থাকত!

সমস্যাটা বুঝি। কাদা হাতে কাদা ঘাঁটা যত সহজ, সাদা হাত ধরা অত সহজ কি?

আজ রাধাকৃষ্ণানজীর জন্মদিন। শিক্ষক দিবস। এ কথা গত বছরও এই দিনটাতে লিখেছিলাম যে, যাঁর জন্মদিনটাকে শিক্ষক দিবস হিসাবে পালন হয়, তাঁর লেখা আমাদের সিলেবাসে এত ব্রাত্য কেন?

স্বাধীনতা দিবস। উৎসব? কত বন্ধু ট্যাগ করছেন এখানে। কত বন্ধু ভারতীয় পতাকা পাঠাচ্ছেন ওয়াটস অ্যাপে। খুব ভাল থাকতে চাইছি। মহান মানুষদের কত ত্যাগ, বীরত্ব, ইত্যাদি শুনছি টিভিতে। সত্যি কথা বলতে, ভালো লাগে না এগুলো আর।