গদ্য কবিতা

সে বলল, আবর্জনাই দেখলে ঠাকুর? দেখো, নর্দমার জলে কি মায়াতে চাঁদের ছায়া আছে ভেসে...নীচু কি নোংরা চাঁদ পরোয়া করে না...তোমার ঠাকুরই করে, কি করে যে
তাকে ছোঁয়াছুঁয়ির বাতিকে ধরল এসে...

প্রেমিকার চোখের জল পড়ল হীরের উপর। সে তার কোমল ওষ্ঠে হীরেকে স্পর্শ করে বলল, আমার হৃদয়ের
মণিকোঠায় রেখে দিলাম তোমায়, এই হীরের মত।

পাখি নদীর বুকে ভাসা কাঠে বসল। রাত যায়, দিন যায়। সে কত গল্প করতে করতে চলল। কিন্তু যতই নদী বলে, আর বারোদিন, আর ন'দিন, আর চারদিন... এই তো এসে
গেল সমুদ্র, ততই পাখির মন খারাপ হয়। নদী বুঝতে পারে না। একদিন যখন নদী বুঝল তার বুকে মিশছে নোনাজল, সে পাখিকে বলল, আর কিছুক্ষণ, এই এসে গেলাম আমরা সমুদ্রে!

ঝড়ে উড়ে যাওয়া, ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা খড়কুটোরা জিজ্ঞাসা করল,
পাখি তুমি উদাস কেন? কি হারালে? ...

তোতলা ছিল। তাই কথা কম বলত। ভাবত। দেখত। হাসত। কাঁদত।

বোবা না, তোতলা ছিল। ...

শোক হঠাৎ এসে দাঁড়ালো। অপ্রস্তুত আমি। ব্যস্ত ছিলাম অন্যকাজে।

মিষ্টি কথা ডানা মেলে ডালে গিয়ে বসল।
          সূর্যের আলো এসে পড়ে বলল, এক্ষুণি শুষে নেব তোকে, তুই শেষ হবি আমার হাতে, আমি সত্য।
           মিষ্টি কথা বলল, আমায় শুষে নিতে পারো, আমার যে মাধুর্য প্রাণে জাগিয়ে এলুম, তাকে শুষে নেবে কিসে? শিশিরের গায়ে যে মুক্তো জাগাও, সেও তো মিথ্যা তবে!
...

রাধা বলল, হ্যাঁ গো, এ যে পুজো সম্পূর্ণ না করেই গেল চলে!
          গোবিন্দ বলল, ওই যে দেখো, একটা পাখির শাবক পড়েছে মাটিতে। নীড় ছেড়ে। বেড়ালে খাবে যে ওকে। তাই সে দৌড়ালো পুজো ছেড়ে।
          রাধা বলল, তুমি সে পাখিকে পড়তে দিলে কেন?
....

শুকনো নদী। রাতের তারাভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, আর কতদিন?

কেউ উত্তর দিল না।

ভোরবেলা এলো মেঘ। বৃষ্টি শুরু হল মুষলধারে। নদী ভাসল জলে।

রাতে তারাদের ছায়া পড়েছে উচ্ছল নদীর বুকে। তারা ফিসফিস করে নদীর কানে কানে বলল, আমরা তোমার মোহনা অবধি দেখতে পাই, জানো, তোমার রহস্য বলে কিছু নেই!

নদী বলল, মোহনায় পৌঁছানোর সুখ পাও কি?

পাগল ধেই ধেই করে নাচতে লাগল।

সবাই বলল,
   এই পাগল কি হল?

পাগল বলল,
  আমি সব বুঝে ফেলেচি...সব

সবাই বলল,
  কি বুঝলে?