Skip to main content

পান্নালাল


        জনবহুল রাস্তা। আলোয় আলো চারদিক। দুর্গাপূজোর জামা দ্বিতীয় দফায় কালীপূজোতে বেরিয়েছে আবার। কচিকাঁচা, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী-বয়স্করা রাস্তায় --- ঠাকুর দেখতে, প্যাণ্ডেল দেখতে, আলো দেখতে, মানুষ দেখতে।

বোধ

 অনেকটা রাস্তা চলে আসার পর বুঝল পাকা রাস্তাটা ছেড়ে গেছে অনেকক্ষণ হল। একটা জঙ্গলের মধ্যে অন্যমনস্কভাবেই চলে এসেছে অনেকটা। মাটিতে বসল। যাবে কোথায়? কোনোদিকেই যাওয়ার নেই। কিন্তু দাঁড়াবার জোও তো নেই। মানুষ মনের গুণে ঘুরে মরে। আমি কিসের খোঁজে ঘুরছি তবে? ঈশ্বরের মৃত শরীর দেখে এসেছি নিজের চোখে।

সর্দার

কিছুক্ষণ জঙ্গলে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে সর্দার ঘুমিয়ে পড়েছে। সর্দার মানে সর্দারজী নয়, ডাকাতের সর্দার। অমনি গাছ থেকে একটা ইয়াব্বড় ডাব মাথায় পড়ে সর্দার অক্কা। বেঘোরে মরলে মানুষ কি হয়? ভূত হয়। তো এই সর্দারও তাই হল। প্রথম প্রথম খুব করে শরীরের নানা গত্ত দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে দেখল, কিন্তু হল না, পোষালো না। অগত্যা দেহের মায়া ত্যাগ করে খাঁটি ভূত হয়েই জীবনটা কাটিয়ে দেবে ঠিক করল।

এখনই না

        পুকুরপাড়ে হাঁসগুলোকে ছেড়ে দিয়ে পা ছড়িয়ে ছাতিম গাছটার তলায় বসল বিহান। নীল আকাশ, সাদা সাদা কয়েক টুকরো মেঘ ছড়িয়ে ছিটিয়ে। বিহানের শাড়ির উপর উড়ে এলো কয়েকটা কাশফুলের রোঁয়া। বিহান নিজের পায়ের দিকে তাকালো। কড়া পড়েছে, আঙুলে ফাঁকে ফাঁকে হাজাও আছে। এই শাড়িটা চার বছর আগে

আমগাছ

        মানুষটা আমগাছের চারাটা লাগিয়ে, কয়েকদিন মাত্র নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিল। ভেবেছিল, গাছটা না হলেই ভালো। কিন্তু একদিন ভোর সাড়ে চারটে উঠে বাগানে এসে যেই দাঁড়িয়েছে, তার চোখ ঠোক্কর খেল দুটো সবুজ পাতায়, একটা চারাগাছ জন্মিয়েছে। 

অষ্টমী

        মণ্ডপে আমাদের দাঁড়ানোর লাইন দেখেছেন? পুরুষের লাইন দেখেছেন, মহিলার লাইন দেখেছেন। আমাদের? আমরা ওই মহিলাদের লাইনেই দাঁড়াই। আমরা হলাম জ্বলন্ত উৎপাত বুঝলেন তো। ট্রেনে, বাসে, রাস্তাঘাটে আমরা হলাম জ্বলন্ত উৎপাত।

সপ্তমী

- বেরোতে পারবি? - হবে না রে, মা বেরোতে দেবে না - তুই বল না সঞ্চারীদের বাড়ি নোটস্ নিতে আসবি - ধুর সঞ্চারীরা তো দার্জিলিং-এ - পারমিতা? - মামাবাড়ি, বীরভূম

কেটস

        সাদা কেটস কিনে দিত বাবা। জুটমিলে কাজ করত। আমরা তিন বোন, এক ভাই। আমি সবার বড়, দিদি। ওই কেটসই পেতাম প্রতি বছর। স্কুলেও ওই দিয়েই হয়ে যাবে তাই।

লুকোচুরি

চাদরেও ঠাণ্ডা মানাচ্ছে না। ঠকালো? অথচ বলল, আসল কাশ্মীরি শাল নাকি। আমার এই প্রথম এইদিকে আসা। ছাপরা স্টেশান থেকে বারো কিলোমিটার দূরে একটা জঙ্গল ঘেরা স্টেশান। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা।

ধুলো

        উঠোন ঝাঁট দিতে দিতে রোজই বড় রাস্তায় চলে আসে বাড়ির বউটা। ঝাঁট দিতে দিতে কখন ঘোমটাটা খুলে যায় তাও খেয়াল থাকে না। এই নিয়ে নিত্য গঞ্জনা শুনতে হয় তাকে। 
        সেদিন রাতে সে বরকে জিজ্ঞাসা করল, বড় রাস্তায় গেলে কি হয়? 
        বর বলল, বেশ্যা।

Subscribe to অনুগল্প