থাক
মাঝে মাঝে সব গুলিয়ে যাওয়া ভাল। আবার করে গোছাতে গিয়ে, কিছু জিনিসকে আবার নতুন করে চেনা যায়। যাকে মনের নীচের তাকে রেখেছিলাম তুচ্ছ করে, তাকেই হঠাৎ করে ড্রয়ারে তালা দিয়ে সুরক্ষিত রাখতে ইচ্ছা করে। মনে হয়, এতো মূল্যবান জিনিসটা চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল কি করে!
বাজার
বাজারে তো আর জামার অভাব নেই। কত কায়দা, কত রঙ, কত বাহার! তা বলে কি সব জামা আমার মাপের হয়, না সব জামায় আমায় মানায়!?
এটা বুঝে গেলে, বাজার আর আমাকে তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় না। বাজারের প্রয়োজন নিজের প্রয়োজন ফুরালেই ফুরায়।
এটা না বুঝলে বাজার আর কিছুতেই পিছু ছাড়ে না। আত্মার দেহ ছাড়ার সময় হয়ে যায়, কিন্তু দেহের আর বাজার ছাড়ার সময় হয় না। মন সাবধান!
প্রকাশ
আবরণ
ভারী বাতাস। জলে ভারী। কালো মেঘের বুকে জমে থাকা বিদ্যুতের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে অবাক হয়! এত আলো! এত তেজ! তবু সে মেঘের বুকে মিলিয়ে থাকে কি করে? কেন সে থাকে?
সে বৃষ্টি হয়ে নীচে পড়ে। কত রঙের ফুল পৃথিবীর বুকে ফুটে। তার অবাক লাগে। এত রঙ! এত রূপ! তবু এই একরঙা সবুজ গাছগুলোর মধ্যে লুকিয়ে থাকে কি করে? কেন তারা থাকে?
হিংসা
দুর্বলের হিংসাই একমাত্র সম্বল আর অভিযোগই একমাত্র হাতিয়ার। এটা বেশ বুঝতে পারছি। কবে একটা গল্প পড়েছিলাম। একটা মশা হাতির পিঠে বসেছিল। তা আচমাকাই হাতির লেজের বাড়ি খেয়ে ঘায়েল হয়ে, ঘ্যান ঘ্যান শুরু করে, এটা কি ন্যায্য বিচার হল!
তারপর অনেক জল এনে হাতিটাকে ডুবিয়ে মারার চেষ্টাও করে মশা। হয় না।
হাল্কা জ্ঞান
জ্ঞান মানে, অনেক জানা না। জ্ঞান মানে অনেক কিছুই যে জানি না, এটা জানা। তখন থেকেই বাঁচা শুরু, নির্ভয়ে, সপ্রেমে।
নির্ভয়ে, কেন না ভয়ের মূল যে 'আমি' নামক গ্যাস বেলুন, তাতে 'ছিদ্র হইয়াছে'। সমস্ত গরম হাওয়া বেরিয়ে, সে অসীমের কোণে চুপসে পড়ে আমার দিকে জুলজুল চোখে তাকিয়ে আছে। তাই আর ভয় নাই। ওই যে ঠাকুর বলতেন না, 'আমি মলে ঘুচিবে জঞ্জাল', অনেকটা সেই আর কি।
বেরিয়ে এসো
রেগো না। রেগে লাভ নেই। বরং মুখ ফেরাও। চলন্ত রিকশার স্পোক গোনার চেষ্টা করো। বা নিজের বুকের জামাটা খামচে ধরে নিজেকে হেঁচড়ে বার করো, তবু রেগো না। রেগে লাভ নেই।
প্রত্যাশা রেখো না। লাভ নেই। ভুলে যাও। যেমন উনুনে আঁচ ধরিয়ে ধোঁয়াকে ভুলে যায়। কারোর চোখের দিকে বেশিক্ষণ তাকিও না। কুকুরটার ল্যাজটার দিকে তাকাও। হাজার চেষ্টাতেও সোজা হয় নি যেটা। হাত দুটো পকেটে ভরো। পেতো না।
পরিস্থিতি ও আমরা
যে, কোনো পরিস্থিতিতেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে না, সে নির্বোধ।
যে, সব পরিস্থিতিতেই দারুনভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে, সে অত্যন্ত চালাক।
মনের মধ্যে একটা ঘর বানাও
মনের মধ্যে একটা ঘর বানাও। শুধু নিজের জন্য। সে ঘরের চাবি কারোর হাতে দিও না। কারোরই হাতে না, সে যেই হোক। ঘরটা নিজের মত সাজাও।
সে ঘরে দেখা পেতে পারো হঠাৎ কোনো একদিন অচেনা অতিথির। যুগান্তরের নিমন্ত্রণ যেন তার তোমার সেই ঘরে। কি মন্ত্রবলে খুলে ফেলেছে সে তোমার গোপন ঘরের দরজা। সেই তোমার প্রাণের সখা, তোমার বঁধূ। তাকে বরণ করে নিও।