গৃহস্থ বটবৃক্ষের তলায় বসে থাকা বাউন্ডুলেকে বলল, কী খেলে দুপুরে?
বাউন্ডুলে বলল, প্রসাদী খিচুড়ি। তুমি?
গৃহস্থ শীর্ণ পেটে হাত বুলিয়ে বলল, মুরগীর মাংস। ভাত। চাটনি। মিষ্টি।
বটবৃক্ষে হাওয়া লাগল। ঝোড়ো হাওয়া। বাউন্ডুলে বলল, ঘরে যাও, ঝড় আসছে।
গৃহস্থ আকাশের কোনে বিনা আমন্ত্রণে আসা কালো ষাঁড়ের মত মেঘ দেখে বলল, আমি যাই...তুমি? আমার বাড়িতে ডাকতে পারি না....তুমি নোংরা।
বাউন্ডুলে হাসল। বলল, যাও। এখনই ঝড় আসবে। এই বলে সে পা দুটো গাছের তলায় মেলে টানটান শুয়ে পড়ল।
গৃহস্থ ঘরে গিয়ে দরজা জানলা বন্ধ করল। বাজ পড়তে শুরু করল। যেন আকাশ ভেঙে চৌচির হবে এখনই। শাঁখ বাজাতে বাজাতে গৃহস্থ গুরুমন্ত্র জপ করতে লাগল। ঠাকুর রক্ষা করো।
ঝড় থামল। গৃ্হস্থ বাইরে এলো। চাদর গায়ে। বৃষ্টিতে ঠাণ্ডা নেমে এলো হঠাৎ। বাউন্ডুলে কই? গৃ্হস্থ অপেক্ষা করতে লাগল। সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হল। বাড়ি থেকে ডাক পড়ল খাওয়ার। গৃহস্থ আনমনা। খেল। তৃপ্তি হল না। শুতে যাওয়ার আগে, আবার এল বটবৃক্ষর তলায়। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে কান্না পেল। সে যে হারিয়ে গেছে। বাউন্ডুলে বুঝেছিল সে কথাটা। হারিয়ে যাওয়া মানুষ যদি ঘর বাঁধে, সে ঘরে সুখ আসে বাউন্ডুলে? সুখ বলে যা দেখায়, সে তো সুখের অভিনয়। তুমি হারিয়ে গেলে সব হারানো মানুষ হারিয়ে যাওয়ার কথাটাই ভুলে যাবে বাউন্ডুলে। ফিরে এসো।