Skip to main content

বিষে অমৃতের বিন্দু

        সংসারে আশ্রিত মানুষের হাতে সংসারের ভার দিলে যে কি অনর্থ হয় তা বুঝতে বিপুলের কয়েক বছর লেগে গেল। বিপুল যেদিন প্রথম চাকরিতে জয়েন করতে গেল সেদিন সারারাত ট্রেনে যেতে যেতে একটাই কথা তার মাথায় ঘুরতে লাগল, তার মায়ের মৃত্যু আর তার দূর সম্পর্কের পিসিমার কথা। সারাটা ট্রে

গ্রহণ

        হাতের কাছে একটা পিস্তল থাকলে হয়ত ভালো হত। মোহান্ত স্নান সেরে মেঝেতে কৃষ্ণের বিগ্রহের সামনে চোখ বন্ধ করে বসে। গঙ্গার হাওয়া জানলা দিয়ে ঘরে একটা বাচ্চা ছেলের মত এলোমেলো ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মোহান্তের পিঠের উপর এলিয়ে পড়া সাদা চুলের গুচ্ছ দুলিয়ে দুলিয়ে যাচ্ছে। সারা

অবিরাম

 অনিকেতবাবু ঝাঁট দিতে দিতে শ্যামাসঙ্গীত গাইছেন। ব্যাঙ্কে ক্লার্ক ছিলেন। বয়েস আটাত্তর। শক্ত-সমর্থ চেহারা। পাড়ার কচি-কাঁচাদের সাথে বেশ বন্ধুত্ব, বলেন, আমি খাঁটি খেয়েছি তাই এ্যাদ্দিন এইভাবে চালিয়ে যাচ্ছি, তোরা পারবি নাকি?

চুমু

 বুড়োটা রিকশা চালিয়ে যখন রাস্তা দিয়ে যেত, মনে হত, পরের বারের প্যাডেলটা ঘুরাবার জন্য সে বুঝি আর জীবিত থাকবে না। লোকে একান্ত কাউকে না পেলে তবেই ওর রিকশায় উঠত। করুণায় নয়, সময়ের দাম আছে না? অত আস্তে চালালে হয়?

দীর্ঘশ্বাস

        লোকটা একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ফেলবে বলে একটা বড় শ্বাস নিল। বুকটা এত্তবড় হয়ে গেল যে পাঁজরে আওয়াজ হল কট-কট-কট্টাস করে। ফুসফুসটা এত্তবড় হাঁ করল যে তার আলজিভ পর্যন্ত গীর্জার ঘন্টার মত দুলে উঠল। ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাস, ব্রঙ্কিওল, অ্যালভিওলাই জুড়ে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল। এত্ত জোরে বাতাস ঢুকছিল যে কয়েক যুগ অত বাতাস নেয়নি লোকটা। প্রতিটা কোষ নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিল -

গবেষণা

কোন চিকিৎসকের কাছে না গেছে লোকটা? কেউ সুরাহা দিতে পারেনি। বিদেশেও গেছে, কেউ কেউ বলে। নিন্দুকেরা বলে, উঁ! বিদেশ গেছে না ছাই... সুন্দরবনে গিয়ে সেঁধিয়ে ছিল। সে যাই হোক, লোকটা চেষ্টার অন্ত রাখেনি। তার একটাই সমস্যা – কেন কুড়িটা নখ আর তেত্রিশ হাজার উনপঞ্চাশটা মাথার চুল বেড়ে বেড়ে যাবে প্রতিদিন, প্রতিমাস, প্রতিবছর। সব চিকিৎসকের একটাই কথা – এটাই প্রকৃতির নিয়ম। তারও একটাই কথা – নিয়ম বলেই মানতে হবে?

দড়ি

        সংখ্যায় বিশ্বাসীরা, সংখ্যা বাড়াতে বাড়াতে কোথাও একটা ঠেকলেই বিরক্ত হয়। তখন গোনায় মানুষ বাধা হয়ে এসে পড়লেও সরিয়ে দিতে হয়। সংখ্যায় বিশ্বাসীরা পাগলের মত গুনে চলে, ১.. ১০০.. ১০০০০... ১০০০০০০। সামনে কাউকে সহ্য করতে পারে না। নিজের ছায়াকেও নয়। একটা গল্প বলি।

ঈর্ষা

    প্রথমঃ

গুজব

কড়ে আঙ্গুলের থেকেও ছোট নদী। বেশ আসছিল একটা পল্লীগীতি গাইতে গাইতে। বাধা দিল একটা পাঁচিল। না বাঁদিকে যেতে দিল, না ডানদিকে। নদীটা গর্ত খুঁড়ে নীচে যেতে গেল, ভিতটা নামছে তো নামছেই। পাঁচিলটা বাদিকের ঠোঁটের কোণে উপেক্ষার হাসি হাসল। নদীটা বলল, যাব যে! পাঁচিল বলল, না। ক্রমে কড়ে আঙ্গুলের মত নদীটা বুড়ো আঙ্গুলের মত হল। ততদিনে বছরখানেক তো হয়েছেই। নদী বলল, এবার যেতে দাও। পাঁচিল বলল, না।
...

ক্ষুর

        গলায় ক্ষুরটা চেপে ধরল। আমি জানতাম, এটাই হবে। এদিক ওদিক দিয়ে কয়েকজন যাচ্ছে। কেউ তাকাচ্ছে না একবারও। তাদের মধ্যে চেনা পরিচিতও যে নেই, তা তো নয়। তবু সবার ভীষণ তাড়া। নিজের চিন্তার কৌটে নিজে মুখ ডুবিয়ে মাথা নীচু করে হনহন করে হেঁটে চলে গেল। অথচ এদের সাথে রাস্তায়, বাড়ির বসার ঘরে, ট্রেনের হাতলে ঝুলতে ঝুলতে কত কথা বলেছি। গল্প করেছি। পিকনিকে গেছি। কিন্তু এদ

Subscribe to অনুগল্প