অনুগল্প

উঠান ঘেরা কয়েকটা বড় বড় গাছ। আম, জাম, কাঁঠাল। মাঝে একটা বাড়ি। দুটো বড় ঘর, একটা বারান্দা। টালির ছাদ। বাউলের বাড়ি।
      মদনপুর স্টেশানে বাউল বসে। ভীষণ অসুস্থ। পাড়ার একটা ছেলে পৌঁছে দিয়ে গেছে। টোটো করে। মানুষের উপর অগাধ বিশ্বাস বাউলের।
...

সেদিন গ্রামের সবাই চুপ করেছিল সকাল থেকে। কারণ শেষ রাতে গ্রামের সবাই স্বপ্ন দেখেছিল, আজ কথা বলতে গেলেই সবাই সত্যি কথা বলে ফেলবে। না চাইলেও বলে ফেলবে।
      সারাদিন গ্রামে বাচ্চাদের চীৎকার, মুরগী-গোরু-মোষের ডাক ছাড়া কোনো কোলাহল ছিল না।
...

শিশির ভেজা ঘাসের উপর ছোটো ছোটো পায়ের ছাপ। শিউলি ছড়ানো এমন, যেন পায়ের ছাপের উপর আলগোছে কেউ রেখে গেছে, অঞ্জলির মত।
      দীর্ঘাকৃতি পুরোহিত ফুল তুলতে এসেছিল। কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে সে পায়ের ছাপগুলোর দিকে তাকিয়ে রইল।
...

বসার ঘরে টিমটিমে আলো জ্বলছে। জানলায় নেট লাগানো। একটু আগে ধুপকাঠি জ্বলছিল হয়ত, ঘরটা একটু ধোঁয়া ধোঁয়া। মিষ্টি গন্ধ।
      বড় ঘরটা বেশ। মিঠু আর প্রদীপ চেয়ারে বসে। তাদের মাথার উপরের ফ্যানটা বন্ধ। ওদিকে পাত্রপক্ষ, ছেলের বাবা-মা, মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে।
...

নীল শাড়িটা লোহার বাক্স থেকে বার করে চাঁদের আলোয় বিছানার উপর মেলে ধরল। বাচ্চাটা ঘুমাচ্ছে মেঝেতে মাদুর পেতে। প্রচণ্ড গরম। হোক আশ্বিন, তবু প্যাচপ্যাচে গরম।
...

    সকাল থেকে একটা মালাও বিক্রি হয়নি। বাড়ি গেলে মা মারবে। খুব জ্বর মায়ের, বিছানায় শুয়ে। আসলে মালাগুলো বিক্রি হবে না সে জানত, অনেকগুলো ফুলে কালো কালো দাগ।
...

প্রতিদিন ভোরে লোকটার মাথার কাছে একটা চিরকুট রেখে যায়। সেই চিরকুটে কোনোদিন লেখা থাকে ভৈরব, কোনোদিন সাহানা, কোনোদিন হিন্দোল, কোনোদিন পটদীপ এরকম নানা রাগের নাম।
...

মানুষটা ঋষিতুল্য জীবনযাপন করে ধনী হতে চাইছিল, সুখী হতে চাইছিল, নামী হতে চাইছিল। একজন রঙীন ঈশ্বরের দিকে তাকিয়ে প্রতিদিন প্রার্থনা করত - হে ঈশ্বর, তুমি আনন্দস্বরূপ, তুমি সুখস্বরূপ,
...

 গোলাপি ফ্রক গায়ে দরজার কাছে নাচছে ছোট্টো দুটো পা, কারণ মোড়ের মাথায় কাঁধে কালো ব্যাগ, একটু ঝুঁকে হাঁটা যে মানুষটা আসছে সে তার সম্রাট, শক্তিমান, সুপারম্যান।
...

এই তৃষা তার তৃষা। ব্যাঙ্কের চেয়ারে বসে থাকা তৃষা নয়। হোক ম্যানেজার, সে যতই সফল ম্যানেজার হোক, আসলে সে এই তৃষাকেই চেনে।
...