রম্যরচনা

আজ তো আমরা জোম্যাটো, সুইগি ইত্যাদি কত কত নাম শুনছি। কিন্তু একি খুব নতুন? মোটেই না। এই সব কাজ আগে ভূতে সারত। হাতে তালি দিয়ে, "আয় রে আয় হাঁড়ি হাঁড়ি মণ্ডামিঠাই কাঁড়ি কাঁড়ি", এসব সুর করে গাইলেই হত। অ্যাপ্সের কথা ভাবছেন? মানে সে সব ছিল কিনা? মোটেই না। খালি গান গেয়ে, সে সুরে হোক চাই বেসুরে হোক, ভূতের রাজাকে খুশি করলেই হত। আপনাকে তখন আর পায় কে?

আজ একটা গল্প মনে পড়ছে। আমি কলেজে শুনেছিলাম। 

একটা প্লেন ক্র‍্যাশ হয়েছে। প্রাইভেট প্লেন। দেশের কোনো এক মন্ত্রীর প্লেন ছিল। যদিও কেউ মারা যায়নি, কিন্তু সবাই কোমায়। সুস্থ বলতে একমাত্র একটা শিম্পাঞ্জি, সেও ওই প্লেনেই ছিল। 

ভ্যাক্সিন, করোনা, ইভিএম আসিয়া
দাঁড়ায়ে আছে দ্বারের কাছে

তাই জাগিয়া উঠিয়া
   পরান আমার
আলজিব ধরিয়া 
    ঝুলিয়া আছে
      গলার কাছে

ওগো মঞ্চে টিভিতে পেপারে আজিকে কি হট্টগোল 
দে দোল দোল
দে দোল দোল 

তখন সদ্য টুইটারে অ্যাকাউন্ট খুলেছি। কলেজ পাশ করেছি সদ্য, মনে বেশ একটা দেশের কাজ করার ইচ্ছা। হঠাৎ রবীন্দ্রনাথ টুইট করলেন যারা যারা শান্তিনেকতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রমে যোগ দিতে চাও, নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে ফর্ম ভরে ফেলো। 

লালি ঘোষ, শান্ত মানুষ। রাতে ঘুম আসছে না বলে রাস্তায় পায়চারি করতে করতে পার্কের বেঞ্চে এসে বসেছে। নতুন কথা কিছু না, রোজই বসে। আজ বসেছে কারণ প্রচণ্ড পেট জ্বালা করছে। পাঁঠা হজম হচ্ছে না। কিন্তু পেট

মুড়ি ভীষণ নিরহংকারী। মুড়ি দেখলে, মুড়ি স্পর্শ করলে, মুড়ি চিবোলে মনের অহংকার নাশ হয়। কলির এই ক্লাইমেক্স কালে হরিনামের চাইতেও শুদ্ধচিত্ত হওয়া সম্ভব মুড়ির মাধ্যমে। জাতি-ধর্ম-লিঙ্গ ইত্যাদি সবেতেই এক ফল। অহংনাশ। পিত্তিনাশ। একসঙ্গে হবে। হবেই হবে।

আমার খুব কাছের এক বন্ধু তার জগন্নাথ দর্শনের গল্প বলছিল। আমি না হয় তার ভারসানেই লিখিঃ 

তো কি হল কিছু বঙ্গসন্তানের ইচ্ছা হল জঙ্গল থেকে বাঘকে আনবে আমন্ত্রণ করবে। বেজায় বড় উৎসব করবে, লোককে একেবারে তাক লাগিয়ে দেবে।

যেই প্রশ্ন করল, অমনি সব ধাঁ।

      একটাও ভুত নেই! অথচ দোষের মধ্যে সে কি জিজ্ঞাসা করেছিল, হ্যাঁ গা, তোমাদের চোঁয়া ঢেকুর ওঠে?