রাস্তা
সেদিন দেখলাম
অমন ব্যস্ত রাস্তায়
ঝরে পড়ে আছে কতশত রাধাচূড়া
গতকালের ঝড়ে ঝরেছে নাকি
রাস্তা বলেনি ওদের,
"সরে যাও তোমরা, আমার যে কত কাজ!"
রাস্তা জানে
সময় হলে ওরা এমনিই যাবে মিলিয়ে,
ধুলোয়, ব্যস্ত অবহেলায়
নিরাপদ মানুষ
যে মানুষ বলে, আমি কাউকে ভয় করি না।
আমি তাকে ভয় করি।
যে মানুষ বলে, আমি অত্যন্ত কঠোর জীবনযাপন করি, এ আমার ধর্ম।
আমি তাকেও ভয় করি,
যে নিজের উপর কঠোর হওয়াকে গর্বের বলে জানে, সে অন্যের উপর নিষ্ঠুর হওয়াকে জানে দায়িত্ব বলে।
যে মানুষ বলে, আমি স্পষ্টবক্তা, আমি কোনো কথা রেখেঢেকে বলি না।
না জানি কি করে
===
গোলাপটা সাবানজলে কেচে
রোদে শুকাতে দিয়েছে দেখলাম
কাচাকাচির পরে,
চড়া রোদের তাপে
উজ্জ্বলতায় ফেটে পড়ছে যেন
কৃত্রিম না হলে
এতটা নির্লজ্জ কেউ হতে পারে?
মানুষ কি সে!
মানুষ এখন কমতে কমতে সংখ্যা
মানুষ এখন ব্রেকিং নিউজে কয়েক মিনিট
মানুষ এখন বোতাম টেপা স্ফুলিঙ্গ
মানুষ এখন ধ্রুবতারা চেনে বিভাজন রেখায়
মানুষ এখন কোলাহলে ঘেরা শুধুই কুয়াশা
মানুষ এখন আর যাই হোক
সন্দেহ তার নিজেকে নিয়ে
মানুষ কি সে!
আমিও আছি
ঝড়
তখন বিস্তীর্ণ মাঠের মধ্যখানে,
যখন ঝড় উঠল
যা কিছু স্পষ্ট
মুহূর্তে হল অস্পষ্ট
ধুলো ধুলোয় ঢাকল
এমন আত্মবিশ্বাসে
যেন ওরই এখন আসার কথা ছিল
আমার এখানে থাকার কথা ছিল কি?
ক্যানভাসের নিস্তব্ধতা
হয় তো নিঃসঙ্গ ছিলে
নিস্তব্ধ ছিলে কি?
যদি থাকতে
জানতে তবে
একটা পাতা ঝরানোর জন্যও
কত আয়োজন লাগে,
একটা সবুজ ঘাসও হলুদ হয়ে যায় না রাতারাতি
আসলে ক্যানভাসের নিস্তব্ধতাকে বুকে জড়িয়ে নাওনি কোনোদিন
কোনো ছবিই সম্পূর্ণ হল না তাই
দে দোল দোল
কে তুমি
সদ্য ফোটা ফুলের উপর
সবুজ পাতার উপর
যখন ভোরের শিশির পড়ল
বিন্দু বিন্দু মুক্তোর মত জ্বলে উঠল
রবিরশ্মির প্রথম কিরণে
মাধুর্য বলল, আহা!
শুকনো পাতার উপর
শুকনো ডালের উপর
ভোরের শিশির পড়ল যখন
বাসনা বলল, এত অকিঞ্চিৎকর তুমি!
শিরিরকণা বলল, কেন?
তুমিও হও তুমি
তুমি কবিতা লিখে পাঠিও
শব্দের নির্বাচন
ঠিক হোক না হোক
তোমার অনুভবটুকু হোক খাঁটি
নিঃশব্দ চোখ
যদি এত গভীরে পুড়িয়ে যেতে পারে
তোমার অসম্পূর্ণ ভাষাতেও
পুড়ে যাব আমি