মেয়েটা বলল, তুমি ফোনটা ধরে থাকো, সাইকেলে আমার জামা আটকে গেছে……
মেয়েটা অন্ধকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে জামা ছাড়াচ্ছে সাইকেলের থেকে। চেনকভারের পিছনের দিকে আটকেছে জামা। জৈষ্ঠের আকাশে জমছে কালবৈশাখীর মেঘ। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। ছেলেটা ফোনের ওপাশ থেকে বলল, হল?
মেয়েটা বলল, আরে ধুর!
ঝড় উঠল। আম, কৃষ্ণচূড়া, শিরীষ দুলতে দুলতে বলল, হল? বাড়ি যা! ঝড় উঠল যে!
তার জামা খুলতে গিয়ে ছিঁড়ল। বলল, ইস!
ছেলেটা বলল, ছিঁড়ল? কোন জামাটা?
মেয়েটা বলল, নীল জামাটা।
পৃথিবী জুড়ে এত নীল জামা, তবু সে লক্ষ লক্ষ নীলজামার মধ্যে এই নীল জামাটাকে চিনে নিল। বলল, পুরোনো হয়েছিল। যাক। তাড়াতাড়ি বাড়ি যাও, ঝড় আসছে।
মেয়েটা এতক্ষণ খেয়াল করেনি ঝড় এসেছে। তার নীলজামা উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে ঝড়ে। সাইকেলে উঠে বলল, ঝড় উঠেছে গো….বাড়ি যাব কী করে?
ছেলেটা বলল, ধীরে চালাও…তাড়াহুড়ো কোরো না…বৃষ্টি নামলে দাঁড়িও….
বৃষ্টি নামল। মেয়েটা একটা বন্ধ দোকানের সামনে দাঁড়ালো।
মেয়েটা বলে চলল সারাদিনের কাজের কথা। ছেলেটা বলল তার গোটা দিনের কত গল্প! যেন বৃষ্টি আর মাটির গল্প - ফুরায় না।
মেয়েটা বলল, বৃষ্টি থেমেছে! বাড়ি যাই। ফোন রাখি। জোরে চালাতে হবে।
ছেলেটা বলল, আচ্ছা।
মেয়েটা ফোন বন্ধ করে ব্যাগে ভরল। সাইকেলের গতি দ্রুত হল। ব্যাগের মধ্যে খালি টিফিনবক্স ঝনঝন করতে লাগল। সঙ্গে কনকন করতে লাগল নীরব ফোনের ব্যথাটা।